Class 9 (ক্লাস 9 / ক্লাস নাইন বা নবম শ্রেণী) এর ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য রনজিৎ গরাং এর লেখা প্রাক মাধ্যমিক আধুনিক ভূগোল ও পরিবেশ বইয়ের ষষ্ঠ অধ্যায় দুর্যোগ ও বিপর্যয় অনুশীলনীর বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ) ,অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক (VSA) প্রশ্ন সত্য বা মিথ্যা নিরুপণ ,শূন্যস্থান পূরণ , স্তম্ভ মেলাও, নীচের বিবৃতির সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্ণয় করো এই সমস্ত সমাধান বইটি ভালো করে খুঁটিয়ে পড়ে নিচে করে দেয়া হলো। wbbse class 9 geography chapter 6
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ)১। এর মধ্যে কোনটি প্রাকৃতিক বিপর্যয় নয়—
ক) ঘূর্ণিঝড়
খ) সুনামি
গ) ভূমিকম্প
ঘ) মৃত্তিকা ক্ষয়
উত্তর:ঘ) মৃত্তিকা ক্ষয়
২। বিপর্যয়ের প্রভাব পড়ে খুব—
ক) কম
খ) খুব কম
গ) বেশি
ঘ) খুব বেশি
উত্তর:ঘ) খুব বেশি
৩। ভারতের সর্বাধিক বন্যাপ্রবণ অঞ্চল হল—
ক) অসম
খ) মেঘালয়
গ) মহারাষ্ট্র
ঘ) কেরল
উত্তর:ক) অসম
৪। সুন্দরবন অঞ্চলে প্রায়শই বন্যার প্রধান কারণ—
ক) প্রবল বৃষ্টি
খ) নদীতে জলপ্রবাহ
গ) বরফ গলন
ঘ) ভরা কোটাল
উত্তর:ঘ) ভরা কোটাল
৫। কোন্ দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের জন্য কালাহান্ডি অঞ্চলকে আমরা জানি—
ক) বন্যা
খ) খরা
গ) দাবানল
ঘ) ভূমিকম্প
উত্তর:খ) খরা
৬। খরা বিপর্যয়ের আকার নেয় যখন বৃষ্টি স্বাভাবিকের তুলনায়-
ক)১০%
খ) ২৫%
গ) ৫০%
ঘ) ৭৫% কম হয়
উত্তর:ঘ) ৭৫% কম হয়
৭। সাম্প্রতিক উত্তরাখণ্ডের বিপর্যয়ের মূল কারণ—
ক) ভূমিকম্প
খ) দাবানল
গ) সুনামি
ঘ)হড়পা বান
উত্তর:ঘ)হড়পা বান
৮। এর মধ্যে কোটি স্থলভাগের ঘূর্ণিঝড়—
ক) টাইফুন
খ) হ্যারিকেন
গ) টর্নেডো
ঘ) উইলি-উইলি
উত্তর:গ) টর্নেডো
৯। ভারতের কোন্ অঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রভাবে বিপর্যয় প্রায়শই ঘটে-
ক) হিমালয়
খ) গঙ্গাসমভূমি
গ) ডেকানট্র্যাপ
ঘ) দাক্ষিণাত্য মালভূমি
উত্তর:ক) হিমালয়
১০। পার্বত্য অঞ্চলে হালকা কাঠের বাড়ি তৈরির প্রধান কারণ—
ক) ভূমিকম্পের হাত থেকে বাঁচা
খ) খরার হাত থেকে বাঁচা
গ) বন্যার হাত থেকে বাঁচা
ঘ) দাবানলের হাত থেকে বাঁচা
উত্তর:ক) ভূমিকম্পের হাত থেকে বাঁচা
১১। উত্তর-পূর্ব ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে কোন্ দুর্যোগ বর্ষাকালে প্রায়শই ঘটে—
ক) ভূমিকম্প
খ) বন্যা
গ) ভূমিধস
ঘ) সুনামি
উত্তর:গ) ভূমিধস
১২। পশ্চিমবঙ্গে নিম্নলিখিত কোন্ জেলায় বন্যা প্রায়শই হয়—
ক) দার্জিলিং
খ) পুরুলিয়া
গ) বাঁকুড়া
ঘ) বর্ধমান
উত্তর:ঘ) বর্ধমান
১৩। নিম্নলিখিত কোন্ দেশটিতে প্রায়শই দাবানল সৃষ্টি হয়—
ক) নিউজিল্যান্ড
খ) অস্ট্রেলিয়া
গ) লিবিয়া
ঘ) মিশর
উত্তর:খ) অস্ট্রেলিয়া
১৪। ভারতের কোন্ অঞ্চলে অগ্ন্যুৎপাত ঘটার সম্ভাবনা আছে—
ক) হিমালয়
খ) গঙ্গাসমভূমি
গ) ডেকানট্র্যাপ
ঘ) আন্দামান ও নিকোবর
উত্তর:ঘ) আন্দামান ও নিকোবর
১৫। এর মধ্যে কোন্ বিপর্যয়ে অতি অল্প সময়ে প্রচুর মানুষের মৃত্যু ঘটে—
ক) দাবানল
খ) খরা
গ) শিলাবৃষ্টি
ঘ) ভূমিকম্প
উত্তর:ঘ) ভূমিকম্প
বাক্যটি 'সত্য' হলে 'ঠিক' এবং 'অসত্য' হলে 'ভুল' লেখো : প্রশ্নমান-1
১। দুর্যোগ ঘটলেই বিপর্যয় ঘটে।
উত্তর:'ভুল'
২। পৃথিবীর সকল দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের কারণ হল মানুষ।
উত্তর:'ভুল'
৩। ভারতে হিমানী সম্প্রপাত প্রায়শই ঘটে।
উত্তর:'ভুল'
৪। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পাঞ্জাবে প্রায়শই ক্ষতি হয়।
উত্তর:'ভুল'
৫। ভূমিকম্প হলেই সুনামি ঘটে।
উত্তর:'ভুল'
৬। ভারতে তুষারঝড়ের সম্ভাবনা খুবই কম।
উত্তর:'ঠিক'
৭। উত্তর ভারতে গ্রীষ্মকালে প্রায়শই গরম বায়ুপ্রবাহ ঘটে।
উত্তর:'ঠিক'
৮। সুন্দরবন অঞ্চলে বন্যায় জমি লবণাক্ত হয়।
উত্তর:'ঠিক'
৯। টাইফুন একটি ঘূর্ণিঝড়।
উত্তর:'ঠিক'
১০। পূর্ব উপকূলের রাজ্যগুলিতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে।
উত্তর:'ঠিক'
১১। খরা রোধে বেশি করে গাছ লাগানো প্রয়োজন।
উত্তর:'ঠিক'
১২। বন্যার জন্য প্রকৃতি ও মানুষ উভয়ই দায়ী।
উত্তর:'ঠিক'
১৩। মৃত্তিকার ক্ষয়ের জন্য একমাত্র প্রকৃতিই দায়ী।
উত্তর:'ভুল'
১। সুন্দরবন অঞ্চলে প্রায়শই বন্যার মূল কারণ ____।
উত্তর:ভরা কোটাল
২। চিন সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম হল ____।
উত্তর:টাইফুন
৩। টর্নেডো সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ঘটে ___দেশে।
উত্তর: উত্তর আমেরিকা
৪। সুনামি সৃষ্টির মূল কারণ – ।
উত্তর: সমুদ্রগর্ভে ভূমিকম্প
৫। পশ্চিমবঙ্গের ______ জেলায় ধ্বংসের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।
উত্তর:দার্জিলিং
৬। ফাইলিন এক ধরনের ______।
উত্তর:ঘূর্ণিঝড়
৭। ভারতের ____উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়ে।
উত্তর:পূর্ব
৮। গুজরাটের ভুজে _____বিপর্যয়ের কারণে প্রচুর মানুষ মারা যায়।
উত্তর: ভূমিকম্প
৯। ক্যারিবিয়ান সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের নাম ______ হল ।
উত্তর:হ্যারিকেন
১০। পশ্চিমবঙ্গে খরা প্রতিরোধের জন্য ____ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
উত্তর:বৃক্ষরোপণ
১১। পশ্চিমবঙ্গের ____ একটি খরাপ্রবণ জেলা।
উত্তর:পুরুলিয়া
১২। কোনো অঞ্চলে বৃষ্টি ___শতাংশ কম হলে খরা বিপর্যয়ের আকার নেয়
উত্তর:৭৫
স্তম্ভ মেলাও :
প্রশ্নমান-1
স্তম্ভ 'ক' স্তম্ভ 'খ'
১। টর্নেডো (ক) ভূমিকম্প
২। সাইক্লোন (খ) প্রবল বেগে লাভা
বেরিয়ে আসা
৩। সুনামি (গ) বরফ ভেঙে নেমে আসা
৪। ভূমিকম্প (ঘ) স্থলভাগের ঘূর্ণিঝড়
৫। হিমানী সম্প্রপাত (ঙ) সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়
৬। অগ্ন্যুদ্গম (চ) পাতের সঞ্চালন
উত্তর:
স্তম্ভ 'ক' স্তম্ভ 'খ'
১। টর্নেডো (ঘ) স্থলভাগের ঘূর্ণিঝড়
২। সাইক্লোন (ঙ) সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়
৩। সুনামি (ক) ভূমিকম্প
৪। ভূমিকম্প (চ) পাতের সঞ্চালন
৫। হিমানী সম্প্রপাত (গ) বরফ ভেঙে নেমে আসা
৬। অগ্ন্যুদ্গম (খ) প্রবল বেগে লাভা
বেরিয়ে আসা
দু-এক কথায় উত্তর দাও :
প্রশ্নমান-1
১। World Disaster report অনুযায়ী কতজন মানুষ মারা গেলে সেই দুর্যোগকে বিপর্যয় বলা হবে?
উত্তর: World Disaster report অনুযায়ী দশ বা তার বেশি মানুষ মারা গেলে সেই দুর্যোগকে বিপর্যয়ী বলা হবে।
২। পূর্ব উপকূল বরাবর শরৎকালে বন্যার মূল কারণ কোনটি?
উত্তর: প্রবল ভরা কোটালে সমুদ্রের জল উপকূলে ঢুকে পড়ে।
৩। পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলার নাম লেখো যেখানে খরার সম্ভাবনা খুব বেশি।
উত্তর:পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার খরার সম্ভাবনা খুব বেশি।
৪। 'জল ধরো ও জল ভরো' কর্মসূচি পশ্চিমবঙ্গের কোন অঞ্চলের জন্য প্রকল্প ?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলিতে (পুরুলিয়া,বীরভূম, বাঁকুড়া )খরা প্রতিরোধের জন্য 'জল ধরো ও জল ভরো' প্রকল্প।
৫। পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলার নাম লেখো যেখানে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব খুব বেশি পড়ে।
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব খুব বেশি পড়ে।
৬। সুনামির মূল কারণ কোনটি?
উত্তর:(১) সমুদ্রগর্ভ বা উপকূলে ভূমিকম্পের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৮ অতিক্রম করলে সুনামির সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়। (2) সমুদ্রগর্ভে শিলার অগ্ন্যুৎপাত এবং স্থলভাগের বিশালাকার বরফের চাই সমুদ্রে সজোরে পড়লে সুনার উৎপত্তি ঘটতে পারে
৭। পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলার নাম লেখো
যেখানে বন্যার প্রবণতা প্রায় নেই।
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংও পুরুলিয়া জেলার বন্যার প্রবণতা প্রায় নেই।
৮। নদীবাঁধ ভাঙলে কী ধরনের বিপর্যয় ঘটে?
উত্তর:নদীবাঁধ ভাঙলে বন্যা বিপর্যয় ঘটে।
৯। ভারতের কোন্ ভূপ্রাকৃতিক অংশে ভূমিধস বেশি ঘটে?
উত্তর: দার্জিলিং এর পার্বত্য অঞ্চলে ভূপ্রাকৃতিক অংশে ভূমিধস বেশি ঘটে।
১০। পৃথিবীর কোথায় সবচেয়ে সংখ্যায় টর্নেডো ঘটে?
উত্তর: উত্তর আমেরিকার প্রেইরি অঞ্চলে পৃথিবীর সবচেয়ে সংখ্যায় টর্নেডো ঘটে।
১১। কোন্ দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের ঘটনায় ভৌমজলস্তর নেমে যায়?
উত্তর: খরা দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের ঘটনায় ভৌমজলস্তর নেমে যায়।
১২। ২০০৪ সালের পৃথিবীবিখ্যাত বিপর্যয়ের প্রভাব কোন্ দেশটিতে সবচেয়ে বেশি পড়ে?
উত্তর:২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ায় ঘটে যাওয়া সুনামির প্রভাবে সমুদ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিতে মোট ২ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে ও প্রচুর মানুষ নিখোঁজ হয়।
১। দুর্যোগ কী?
উত্তর:প্রাকৃতিক কারণের প্রভাবে সৃষ্ট যে সকল ঘটনার দ্বারা মানুষের কার্যকলাপের স্বাভাবিক অবস্থার বিঘ্ন ঘটে বা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেইসব ঘটনাই হল দুর্যোগ। দুর্যোগ কখনও নিয়ম করে বা ছন্দোময় ব্যবধানে আসে না—হঠাৎ ঘটে বা নাও ঘটতে পারে।
২। দুর্যোগ কত প্রকার?
উত্তর:উৎপত্তি অনুযায়ী দুর্যোগ তিন প্রকার— (১) প্রাকৃতিক দুর্যোগ(২) মানুষের দ্বারা সৃষ্ট দুর্যোগ (৩) সামাজিক-প্রাকৃতিক দুর্যোগ
৩। বিপর্যয় কী?
উত্তর:দ্রুত ও আকস্মিক ঘটনার প্রভাবে স্বল্পসময়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে বিভিন্ন প্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটে, জ্বর সম্পদ ধ্বংস হয়, অসংখ্য মানুষ মারা যায় এবং ক্ষয়ক্ষতিপূরণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে, তবে সেই ধরনের ভয়ংকর দুর্যোগকে বলা হয় বিপর্যয়
৪। বিপর্যয়ের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:বিপর্যয়ের বৈশিষ্ট্য : (১) এটি দ্রুত ও আকস্মিক ঘটনা। (২) প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ হয়। (৩) প্রচুর মানুষ, প্রাণী ও গবাদি পশু মারা যায়। (৪) সুদুরপ্রসারী ফল হয় গভীর। (৫) ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ অত্যন্ত জটিল হয় এবং (৬) সমস্যা মোকাবিলা কঠিন হয়ে পড়ে।।
৫। সুন্দরবনে বন্যা কেন হয়?
উত্তর:(১)একনাগাড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে,
(২) ঘূর্ণবাতের প্রভাবে প্রবল বর্ষণ হলে,
(৩) নদীতে পলি জমে নদীর জলধারণ ক্ষমতা কমে গেলে,
৬। পশ্চিমবঙ্গের খরাপ্রবণ জেলাগুলি কী কী?
উত্তর: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের খরাপ্রবণ জেলাগুলি হল পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে খরা দেখা দেয়।
৭। ভারতের কোন্ অঞ্চল ও কেন ভূমিকম্পপ্রবণ?
উত্তর:পাতগুলির সঞ্চালনে চাপের হ্রাসবৃদ্ধি, পাতের সরণ ও ভাঙন,ভঙ্গিল পর্বতের উত্থান প্রভৃতি প্রাকৃতিক কারণে যেমন ভূমিকম্প ঘটে।
৮। ভূমিধস কেন হয়?
উত্তর:১) পার্বত্য অঞ্চলে ফাটল তৈরি হলে তার ফাঁকে জল ঢুকে মাটি ও শিলাস্তরকে আলগা করে ফেলে। ফলে অভিকর্ষের টানে এই মাটি ও শিলা মাঝে মাঝেই ধীরে বা হঠাৎ নেমে আসে। বর্ষাকালেই ভূমি ধস বেশি হয়।
(২) পার্বত্য অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা ও বাড়ি তৈরি এবং গাছ কাটার কারণে ভূমি বেশি হালকা হচ্ছে বলে ভূমিধসের মাত্রা বাড়ছে।
৯। হড়পা বান কী?
উত্তর: পাহাড় বা পার্বত্য অঞ্চলে অতি অল্প সময়ে প্রবল বৃষ্টি বা মেঘফাটা বৃষ্টি ঘটলে সমগ্র অববাহিকার বৃষ্টির জল নির্দিষ্ট নদীখাত দিয়ে প্রবল বেগে বয়ে যায়। ফলে সেই অঞ্চলে হঠাৎ বন্যা ঘটে। একেই হড়পা বান বলে।
১০। বিপর্যয় মোকাবিলায় সমাজে ছাত্রের ভূমিকা কী?
উত্তর: দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
(১) বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অন্যান্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষদের কাছ থেকে দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কে ধারণা তৈরি করবে।
(২) তারা দলে ভাগ হয়ে সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে বিষয়টি জানাবে।
(৩) মাঝে মাঝে তারা বড়োদের সঙ্গে নিয়ে মিটিং ও পদযাত্রা করে—মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে। বিপর্যয় মোকাবিলায় দক্ষ মানুষদের নিয়ে এসে মিটিং করবে।
১১। দুটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের নাম লেখো।
উত্তর:দুটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের নাম সুপারসাইক্লোন ,আয়লা।
১২। খরার দুটি ফলাফল লেখো।
উত্তর: খরায়
(১) গাছপালা শুকিয়ে মারা যায়,
(২) খাদ্য ও পানীয় জলের অভাবে বন্যপ্রাণী ও গবাদিপশু মারা যায়,
(৩) চাষবাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়,
(৪) ভৌমজলের ভাণ্ডার কমে যায়,
(৫) পানীয় জলের সংকট দেখা দেয়,
(৬) খাদ্য ও জলের সংকটে দুর্ভিক্ষ ঘটে,
(৭) তাপপ্রবাহ ঘটে।
১৩। দুটি মানুষের সৃষ্ট বিপর্যয়ের নাম লেখো।
উত্তর:দুটি মানুষের সৃষ্ট বিপর্যয়ের নাম মৃত্তিকাক্ষয়, বিষাক্ত গ্যাস নির্গমন, পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ, অগ্নিকাণ্ড প্রভৃতি।
১৪। হিমানী সম্প্রপাত কাকে বলে?
উত্তর:পর্বতের উপর থেকে বিশালাকার বরফের স্তূপ প্রবল বেগে নেমে আসা হল হিমানী সম্প্রপাত। পার্বত্য অংশে একসঙ্গে প্রচুর তুষারপাত হলে হিমানী সম্প্রপাত ঘটে।
১৫। বন্যার দুটি কারণ লেখো।
উত্তর:(১)একনাগাড়ে অতিরিক্ত বৃষ্টি হলে,
(২) ঘূর্ণবাতের প্রভাবে প্রবল বর্ষণ হলে,
(৩) নদীতে পলি জমে নদীর জলধারণ ক্ষমতা কমে গেলে,
(৪) বাঁধ ও জলাধার থেকে হঠাৎ জল ছাড়া হলে, (৫) বড় ও সুনানির প্রভাবে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ঘটলে,
(৬) প্রবল ভরা কোটালে সমুদ্রের জল উপকূলে ঢুকে পড়লে।
সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।
১ দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের পার্থক্য কী?
উত্তর:
২। ভারতের বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলি চিহ্নিত করো।
উত্তর:(ক) অসমের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা (সর্বাধিক বন্যাপ্রবণ অঞ্চল),
(খ) মধ্য গঙ্গা-সমভূমির যমুনা, চম্বল উপত্যকা, (গ) পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চল,
(ঘ) নর্মদা, তাপ্তি উপত্যকা প্রভৃতি।
৩। অসমে প্রায়শই বন্যা হয় কেন?
উত্তর:উত্তর ব্রহ্মপুত্র নদীটি অসম উপত্যকার প্রধান নদী। মূলত দিবং, দিহং ও লোহিত এই তিনটি উপনদীর সংযুক্তিতে ব্রহ্মপুত্র নদের এই উপত্যকার উৎপত্তি বলা যায়। এছাড়া প্রায় ছোট বড় 36 টির বেশি উপনদী ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই নদ অঞ্চলটি বন্যাপ্রবণ, প্রতিবছর এই অঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয় ।
কারণ
(i) নদী খাদের ঢাল অত্যন্ত কম বা এখানকার নদ- নদীগুলিতে ষষ্ঠ খাতের সূত্রের প্রতিফলন দেখা যায় ।
(ii) এই অংশে পর্যাপ্ত মাত্রায় ( প্রতিবছর ) বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে ।
৪। খরা কেন হয়?
উত্তর:(1) দুর্বল মৌসুমি বায়ুর কারণে স্বাভাবিকের তুলনায় বৃষ্টি কম হলে,
(2) মৌসুমি বায়ু দেরিতে এলে বা আগে ফিরে গিয়ে বৃষ্টি কম হলে,
(3) বর্ষাকালে একটানা ১৫ দিন বৃষ্টিহীন থাকলে, (4) পরিবেশ উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে উঠলে,
(5) অনিয়নিয়ন্ত্রিতভাবে গাছ কেটে ফেলার কারণে জলীয় বাষ্পের জোগান কম হলে এবং কৌশিক জল ও ভৌমজল কমে গেলে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
৫। খরা মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
উত্তর: খরা মোকাবিলায় কী কী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি : (১) খরাপ্রবণ অঞ্চলগুলিতে জল ধরে রাখার জন্য ব্যবস্থা প্রয়োজন।
(২) ছোটো ছোটো বাঁধ নির্মাণ করে জল ধরে রাখা দরকার।
(৩) বেশি করে গাছ লাগানো প্রয়োজন, যাতে করে মাটি বেশি জল ধরে রাখতে পারে।
(৪) খরা প্রতিরোধকারী ফসলের বেশি চাষ প্রয়োজন। (৫) হাঁস, মুরগিও পশুপালনের ওপর গুরুত্ব বেশি দেওয়া দরকার।
(৬) ত্রাণ তহবিল থেকে অর্থ সাহায্য প্রয়োজন।
৬। ভারতের কোন্ কোন্ অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে?
উত্তর: ভারতের সব উপকূল রাজ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে পূর্ব উপকূলের তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে।
৭। ভূমিধস কেন হয়?
উত্তর:১) পার্বত্য অঞ্চলে ফাটল তৈরি হলে তার ফাঁকে জল ঢুকে মাটি ও শিলাস্তরকে আলগা করে ফেলে। ফলে অভিকর্ষের টানে ওই মাটি ও শিলা মাঝে মাঝেই ধীরে বা হঠাৎ নেমে আসে। বর্ষাকালেই ভূমিধস বেশি হয়, (২) পার্বত্য অঞ্চলে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা ও বাড়ি তৈরি এবং গাছ কাটার কারণে ভূমি বেশি হালকা হচ্ছে বলে ভূমিধসের মাত্রা বাড়ছে।
৮। হিমানী সম্প্রপাত ও তুষারঝড় কী?
উত্তর:পর্বতের উপর থেকে বিশালাকার বরফের স্তূপ প্রবল বেগে নেমে আসা হল হিমানী সম্প্রপাত। পার্বত্য অংশে একসঙ্গে প্রচুর তুষারপাত হলে হিমানী সম্প্রপাত ঘটে। আমাদের দেশে এই দুর্যোগ তেমন ঘটে না। তবে ইউরোপের আল্পস পার্বত্য অঞ্চলের দেশগুলিতে এবং উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার পার্বত্য অঞ্চলে এটি ঘটে।
নাতিশীতোষ্ণ শীতপ্রধান অঞ্চলে প্রবল ঝড়ের সাথে তুষারপাত হলে সেটি তুষারঝড়
৯। হিমালয় অঞ্চল কেন ভূমিকম্পপ্রবণ?
উত্তর:হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ। এর কারণ
(1) হিমালয় পর্বতমালা ভারতীয় পাত ও ইউরেশীয় পাতের সংযোগস্থলে অবস্থিত এবং এই পাত দুটি এখনও পরস্পরের দিকে এগিয়ে আসছে বলে তাদের সংযোগস্থলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। (2) হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে শিলাস্তরের পার্শ্ববর্তী চাপ ও পীড়নের ফলে শিলায় চ্যুতির সৃষ্টি হয়, যা ভূমিকম্পের অন্যতম কারণ।
(3) ভূমিধসের কারণেও পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। এইসব কারণেই হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে ভূমিকম্প বেশি ঘটে।
১০। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবগুলি লেখো।
উত্তর: (1) প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলের বাড়িঘর ভাঙে, গাছ উপড়ে পড়ে।
(2) প্রচুর ফসল নষ্ট হয়,
(3) টেলিফোন ও বিদ্যুৎব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে, (5) প্রবল বৃষ্টি ও সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে বন্যা হয়,
১১। বন্যা প্রতিরোধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন?
উত্তর:বন্যার পূর্বে গৃহীত ব্যবস্থাগুলি হল –
1) নদী অববাহিকার জলনিকাশি ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো, নদীর ধারণ অববাহিকা ও অববাহিকা অঞ্চলে বনসৃজন, ধাপ কেটে ঢালের পরিবর্তন, পশুচারণ নিয়ন্ত্রণ, সমোন্নতি রেখা বরাবর চাষ ইত্যাদি।
2)নদীর অতিরিক্ত জল সঞ্চয় করে ব্যবহারের জন্য পরিকল্পিত জলাধার ও ব্যারেজ নির্মাণ করা।
3)নীচু এলাকাকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য চারিদিকে বা নির্দিষ্ট দিকে বাঁধ দেওয়া বা ডাইক সৃষ্টি করা।
4) নদীর জলধারণক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নদীগর্ভে সঞ্চিত পলির নিয়মিত অপসারণের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
5) মৃতপ্রায় ও মজে যাওয়া নদীগুলির সংস্কার করা প্রয়োজন।
6) উপযুক্ত প্রচার ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বন্যা তথা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করা যায় |
১২। বিপর্যয় মোকাবিলায় ছাত্ররা বিদ্যালয়ে কী কী ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে?
উত্তর:বিপর্যয় মোকাবিলায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা : দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে ভূমিকা :
(1) বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অন্যান্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষদের কাছ থেকে দুর্যোগ ও বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কে ধারণা তৈরি করবে।
(2) তারা দলে ভাগ হয়ে সমাজের সব স্তরের মানুষের কাছে বিষয়টি জানাবে।
(3) মাঝে মাঝে তারা বড়োদের সঙ্গে নিয়ে মিটিং ও পদযাত্রা করে—মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াবে। বিপর্যয় মোকাবিলায় দক্ষ মানুষদের নিয়ে এসে মিটিং করবে।
বিপর্যয় মোকাবিলা কমিটি তৈরি : শিক্ষকদের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা কতকগুলি দলে ভাগ হয়ে কমিটি তৈরি করতে পারে।
(1) প্রথম দলের কাজ হবে দুর্যোগ ও বিপর্যয় সম্পর্কে মানুষকে সজাগ করা।
(2) দ্বিতীয় দল বিপদগ্রস্তদের উদ্ধারকাজে হতে লাগাবে,
(3) তৃতীয় দল বিপদগ্রস্তদের ফার্স্ট এইড এর ব্যবস্থা করবে,
(4) চতুর্থ দল বিপর্যয় হলে কী করা উচিত তা মানুষকে বোঝাবে এবং
(5) পঞ্চম দল দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের কীভাবে সাহায্য করা যায় তার ব্যবস্থা করবে। এই দল আপৎকালীন একটি তালিকা তৈরি করবে। সেখানে বিপর্যয় সাহায্যকারী সংস্থাগুলির (যেমন: হাসপাতাল, নকল বিভাগ, পুলিশ ফাঁড়ি বা থানা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর) প্রধানের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর থাকবে।
ভালো নাম্বার পেতে আরও পড়তে নিচে লিংকে ক্লিক করুন:
●Class 9 Geography chapter 4 exercise
●Class 9 Geography chapter 8 anusiloni