Class 9 এর ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য দীপ প্রকাশনীর শচীন্দ্রনাথ মন্ডলের লেখা ইতিহাস বইয়ের সপ্তম অধ্যায় :জাতিসংঘ (লিগ অফ নেশনস) এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (ইউনাইটেড নেশনস) অনুশীলনীর বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ) ,অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক (VSA) প্রশ্ন সত্য বা মিথ্যা নিরুপণ ,শূন্যস্থান পূরণ , স্তম্ভ মেলাও, নীচের বিবৃতির সঠিক ব্যাখ্যাটি নির্ণয় করো সমাধান নিচে করে দেয়া হলো।
জাতিসংঘ (লিগ অফ নেশনস) এবং সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ (ইউনাইটেড নেশনস)
(বিভাগ ‘ক)
বহু বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন (MCQ) :
১. সঠিক উত্তরটি লেখো :
(প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১ নম্বর)
১.১ লিগ অব নেশনস-এর সদর কার্যালয় কোথায় অবস্থিত –
(a) নিউইয়র্ক
(b) মিউনিখ,
(c) জুরিখ,
(d) জেনেভা।
উত্তর:(d) জেনেভা।
১.২ লিগ অব নেশনস-এর প্রথম মহাসচিব কে—
(a) কোফি আন্নান,
(b) ট্রিগভি লি,
(c) এরিখ ড্রুমন্ড,
(d) বান-কি-মুন।
উত্তর:(c) এরিখ ড্রুমন্ড,
১.৩ লিগ অব নেশনস-এর স্থায়ী সদস্য কত—
(a) ৫টি,
(b) ৬টি,
(c) ৭টি,
(d) ৮টি।
উত্তর:(b) ৬টি,
১.৪ আন্তর্জাতিক বিচারালয়টি কোথায় অবস্থিত—
(a) হল্যান্ডে,
(b) ইংল্যান্ডে,
(c) সুইজারল্যান্ডে,
(d) স্কটল্যান্ডে।
উত্তর:(a) হল্যান্ডে,
১.৫ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠিত হয়েছিল – খ্রিস্টাব্দে—
(a) ১৯৪৩,
(b) ১৯৪৪,
(c) ১৯৪৫,
(d) ১৯৪৬।
উত্তর:(c) ১৯৪৫,
১.৬ সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ হল
(a) আটলান্টিক চ্যার্টার,
(b) লন্ডন ঘোষণা,
(c) ওয়াশিংটন ঘোষণা,
(d) মস্কো ঘোষণা ।
উত্তর:(b) লন্ডন ঘোষণা,
১.৭ ‘সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ' নামকরণটি কার—
(a) রুজভেল্ট,
(c) স্ট্যালিন,
(b) চার্চিল,
(d) ট্রুম্যান।
উত্তর:(a) রুজভেল্ট,
১.৮ সঠিক বিকল্পটি লেখো : সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদে কয়টি ধারা ও অধ্যায় আছে—
(a) ১০১টি ধারা, ১০টি অধ্যায়,
(b) ১১১টি ধারা, ১৯টি অধ্যায়,
(c) ১১৫টি ধারা, ২৫টি অধ্যায়,
(d) ১০৫টি ধারা, ১৯টি অধ্যায়।
উত্তর:(b) ১১১টি ধারা, ১৯টি অধ্যায়,
১.৯ ইয়াল্টা সম্মেলন আহূত হয়েছিল – খ্রিস্টাব্দে— (a) ১৯৪৫ খ্রি..
(c) ১৯৪৭ খ্রি.,
(b) ১৯৪৬ খ্রি.,
(d) ১৯৫০ খ্রি.।
উত্তর:(a) ১৯৪৫ খ্রি.
১.১০ জাতিপুঞ্জের সনদের কত নং ধারায় ‘নিরস্ত্রীকরণ' শব্দটি গৃহীত হয়েছে—
(a) ১১ নং,
(b) ১৯নং,
(c) ৫১নং,
(d) ৩৯নং।
উত্তর:(a) ১১ নং
১.১১ শূন্যস্থান পূরণ করো : জাতিপুঞ্জের সনদের—ধারা চার উদ্দেশ্যের কথা বলা আছে—
(a) ১নং,
(b) ৫নং,
(c) ৩নং,
(d) ৪নং।
উত্তর:(a) ১নং,
১.১২ জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য সংখ্যা কত—
(a) ৫টি,
(b) ১০টি,
(c) ১৫টি,
(d) ২০টি।
উত্তর:(a) ৫টি,
১.১৩ জাতিপুঞ্জের সনদের কত নং ধারাতে ‘আঙি পরিষদের’ উল্লেখ আছে—
(a) ৫৬ নং,
(b) ৬৬ নং,
(c) ৭৬ নং,
(d) ৮৬ নং।
উত্তর:(d) ৮৬ নং।
বিভাগ ‘খ’
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক (VSA) প্রশ্ন :
২. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও: (প্রতিটি প্রশ্নের জন্য ১ নম্বর)
A. একটি বাক্যে উত্তর দাও :
১। কোন্ সম্মেলনে জাতিপুঞ্জ গঠিত হয়?
উত্তর:প্যারিস শান্তি সম্মেলনে জাতিপুঞ্জ গঠিত হয়।
২। 'U. N. Day' কবে পালিত হয়?
উত্তর:২৪ অক্টোবর দিনটি ইউ. এন. ডে' রূপে পালিত হয়।
৩। লিগ অব নেশনস প্রতিষ্ঠার সময় এর সদস্য কত ছিল?
উত্তর:১৯২০ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার সময় এর সদস্য সংখ্যা ছিল ৪০।
৪। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার সময় এর সদস্য কত ছিল?
উত্তর:১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে সাধারণ সভার সদস্য রাষ্ট্র সংখ্যা ছিল ৫১।
৫। লিগ/জাতিপুঞ্জের সদর কার্যালয় কোথায় ?
উত্তর:'লিগ অফ নেশনস' (১৯১৯) এর সদর কার্যালয় ছিল সুইটজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে।
সম্মিলিত জাতিপুর বা ইউনাইটেড নেশনস অরগানাইজেশন' (১৯৪৫) এর সদর কার্যালয় আমেরিকার নিউ ইয়র্কে অবস্থিত।
৬। লিগ/জাতিপুঞ্জের প্রথম মহাসচিব কে?
উত্তর:লিগের প্রথম মহাসচিব নিযুক্ত হয়েছিলেন স্যার এরিখ ড্রুমন্ড জাতিপুঞ্জের প্রথম মহাসচিব মি. টিভি লি (Mr. Trygve Lie)।
৭। ‘ভেটো' কী?
উত্তর:• ভেটো সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের (ইউ এস এ, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও চিন) বিশেষ ক্ষমতা হল ‘ভেটো’ যার দ্বারা সাধারণ সভার যে-কোনো বিল, বাজেট বা সিদ্ধান্ত তারা বাতিল বা স্থগিত করতে পারে।
৮। কারা ‘ভেটো’ প্রয়োগ করতে পারে?
উত্তর:• ভেটো সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের (ইউ এস এ, রাশিয়া, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স )‘ভেটো’ প্রয়োগ করতে পারে।
৯। I.L.O.-এর কাজ কী ?
উত্তর:আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা (International Labour Organisation) শ্রমিকের উন্নয়নের জন্য কাজ করে।
১০। ‘আটলান্টিক চ্যার্টার' কোথায় স্বাক্ষরিত হয়?
উত্তর:‘আটলান্টিক চ্যার্টার' আমেরিকার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড দ্বীপের কাছে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের কাছে স্বাক্ষরিত হয়।
১১। কার কোন্ কবিতা থেকে ‘U.N.O' নামটি নেওয়া হয়েছে?
উত্তর:ইংরেজ কবি বায়রনের ‘চাইল্ড হেল্ডার' কবিতা থেকে ‘U.N.O' নামটি নেওয়া হয়েছে।
১২। জাতিপুঞ্জের সনদের ১নং ধারাতে কী বলা হয়েছে?
উত্তর: জাতিপুঞ্জের সনদের ১নং ধারাতে চারটি প্রধান উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়। যথা—(১) পৃথিবীর | বিভিন্ন জাতির সমানাধিকার ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রকে বিশ্ব পরিবারের অন্তর্ভুক্ত করা। (২) বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধের বীজ পৃথিবী থেকে বিনষ্ট করা। (৩) অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিক | উন্নতির দ্বারা বিশ্ব মানবের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা। (৪) বিভিন্ন দেশের সৃজনশীল ও গঠনমূলক নানা প্রচেষ্টার মধ্যে সমন্বয় সাধন করাই জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য। মোটকথা, যুদ্ধমুক্ত সুখী পৃথিবীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করাই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রধানতম লক্ষ্য।
১৩। জাতিপুঞ্জের সনদের কোন্ ধারায় নিরাপত্তা পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে?
উত্তর:জাতিপুঞ্জের সনদের ২৩-৩২নং ধারাতে নিরাপত্তা পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে।
১৪। ‘UNICEF’ কথার অর্থ কী?
উত্তর: ‘UNICEF’ কথার অর্থ আন্তর্জাতিক শিশু উন্নয়ন বিষয়ক জরুরি তহবিল (United Nations International Children's Emergency Fund বা UNICEF)
১৫। 'UNESCO' কথার অর্থ কী?
উত্তর:'UNESCO' কথার অর্থ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (United Nations Educational Scientific & Cultural Organisation বা UNESCO)।
১৬। WHO-এর পুরো নাম কী?
উত্তর:WHO-এর পুরো নাম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation বা WHO)
১৭। ‘UNRRA’ কথার অর্থ কী?
উত্তর:‘UNRRA’ কথার অর্থ ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রশাসন ( UNRRA)।
১৮। ‘G-4’ ভুক্ত দেশ কোন গুলি?
উত্তর: ‘G-4’ ভুক্ত দেশ গুলি ভারত, ব্রাজিল, জাপান ও জার্মানি।
১৯। লিগ ও জাতিপুঞ্জের একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:জাতিসংঘ গঠিত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর।
B. সত্য বা মিথ্যা নিরুপণ করো :
(১) লিগ অব নেশনস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।
উত্তর:সত্য
(২) সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে লিগ অব নেশনস-এর সদর কার্যালয় অবস্থিত ছিল।
উত্তর:সত্য
(৩) আটলান্টিক চ্যার্টার সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠনের প্রথম ধারা ছিল।
উত্তর: মিথ্যা
(৪) সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রছাড়া অন্য কেউ ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না।
উত্তর:সত্য
C. শূন্যস্থান পূরণ করো সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো
(১) জাতিসংঘের জনক হলেন – (উড্রো উইলসন/এফ ডি. রুজভেল্ট/চার্চিল)।
উত্তর:উড্রো উইলসন
(২) জাতিসংঘের প্রথম মহাসচিব হলেন (এরিখ ড্রুমন্ড/উড্রো উইলসন/সিন লিস্টার)।
উত্তর: এরিখ ড্রুমন্ড
(৩) ‘ইউনাইটেড নেশনস' নামটি নেওয়া হয়েছে (বায়রণ/ কীটস/শেলী)-র কবিতা থেকে।
উত্তর: বায়রণ
(৪) আন্তর্জাতিক বিচারালয়টি (নিউইয়র্ক/ হেগ/লন্ডন) শহরে অবস্থিত।
উত্তর:হেগ
D. স্তম্ভ মেলাও :
অ আ
(১) জাতিসংঘ (A) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ
(২) রাষ্ট্রসংঘ (B) ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
(৩) লোকার্ণ চুক্তি (C) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ
(৪) কেলোগ-ব্রিয়াঁ চুক্তি (D) ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ
উত্তর:
অ আ
(১) জাতিসংঘ (C) ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ
(২) রাষ্ট্রসংঘ (D) ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ
(৩) লোকার্ণ চুক্তি (B) ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ
(৪) কেলোগ-ব্রিয়াঁ চুক্তি (A) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দ
অ আ
(১) প্রিন্স অব ওয়েলস (A) ২৪ অক্টোবর
(২) লন্ডন চুক্তি (B) ১৯৪৫-র অক্টোবরের পর
(৩) ইউ.এন.ডে (C) ১৪ আগস্ট
(৪) ইউনিসেফ (D) ১৯৪১-র জুন
উত্তর:
অ আ
(১) প্রিন্স অব ওয়েলস (C) ১৪ আগস্ট
(২) লন্ডন চুক্তি ( D) ১৯৪১-র জুন
(৩) ইউ.এন.ডে (A) ২৪ অক্টোবর
(৪) ইউনিসেফ (B) ১৯৪৫-র অক্টোবরের পর
১. বিবৃতি : বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য লিগ অব নেশনস প্রতিষ্ঠা হয়েছিল।
ব্যাখ্যা ১: মানুষ সর্বদাই শান্তিপ্রিয় জাতি।
ব্যাখ্যা ২: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা মানুষকে শান্তিকামী করে তোলে।
ব্যাখ্যা ৩ : শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে তাহার বিশ্বযুদ্ধ বাধতে পারে এই ভয় মানুষকে তাড়া করেছিল।
উত্তর: ব্যাখ্যা ২: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা মানুষকে শান্তিকামী করে তোলে।
২. বিবৃতি : জাতিসংঘের চেয়ে জাতিপুঞ্জ অনেক বেশি ক্তিশালী।
ব্যাখ্যা ১: কারণ এটি পৃথিবীকে বিশ্বযুদ্ধ মুক্ত রেখেছে।
ব্যাখ্যা ২: লিগ মাত্র কুড়ি বছর স্থায়ী হলেও জাতিপুঞ্জ তার চেয়ে নেক বেশি সময় ধরে বিশ্বশান্তি স্থাপনে সফল।
ব্যাখ্যা ৩: কারণ জাতিসংঘের চেয়ে জাতিপুঞ্জে অনেক বেশি সদস্য রাষ্ট্র
উত্তর:ব্যাখ্যা ১: কারণ এটি পৃথিবীকে বিশ্বযুদ্ধ মুক্ত রেখেছে।
বিভাগ-গ
সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক (SA) প্রশ্ন (দু-তিনটি বাক্যে লেখো) : [প্রতিটি প্রশ্নের মান : ২ নম্বর]
১। জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী কী?
উত্তর: 'লিগ কভেনান্ট' বা জাতিসংঘের সংবিধানে লিগের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়(ক) পারস্পরিক আপস মীমাংসা ও বোঝাপড়ার দ্বারা আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান করা হবে। (খ) রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের উন্মাদনা সরিয়ে ফেলে যুদ্ধমুক্ত সুখী ও (গ) নিরবচ্ছিন্ন শাস্তির জন্য কৃতসংকল্পবদ্ধ থাকা 'লিগ অফ নেশনস'-এর প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্রের কাজ।
২। কে, কবে জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন?
উত্তর:১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে উড্রো উইলসন জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন।
৩। জাতিসংঘের অঙ্গ কী কী ?
উত্তর:জাতিসংঘের অঙ্গ হল সাধারণ সভা' , 'পরিষদ' ,'সচিবালয়' , 'আন্তর্জাতিক বিচারালয়' , আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা' , এবং কিছু সেবামূলক সংস্থা।
৪। জাতিসঙ্ঘের সাধারণ সভার কাজ কী?
উত্তর: জাতিসঙ্ঘের সাধারণ সভার কাজ : বছরে একবার এই সাধারণ সভার অধিবেশন বসত। তখন দুই-তৃতীয়াংশ উপস্থিত সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মিলিত সিদ্ধান্ত অনুসারে ইচ্ছুক নতুন রাষ্ট্রকে লিগের সদস্য করা হত। সভার সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন।
৫। লিগের সচিবালয় বলতে কী বোঝ?
উত্তর:লিগের সচিবালয় দপ্তরের প্রথম মহাসচিব নিযুক্ত হয়েছিলেন স্যার এরিখ ভুমন্ড এবং সর্বশেষ মহাসচিব হলেন সিন লেস্টার। তাঁর কাজ ছিল কোনো সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিভুক্ত করা, লিগ পরিষদের ও সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত পরীক্ষানিরীক্ষা করা, জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সংরক্ষণ করা ইত্যাদি।
৬। জেনেভা প্রোটোকলের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর:জাতিসংঘের চেষ্টায় ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে 'জেনেভা প্রোটোকল' ('Geneva Protocol) স্বাক্ষরিত হলে কোনো দেশকে বিদেশি আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সর্বতোভাবে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেয় প্রতিবেশী সদস্য রাষ্ট্রগুলি।
৭। লিগের দুটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য কী কী?
উত্তর:(১) তুরস্ক ও ইরাকের মধ্যে সীমানা নিয়ে বিরোধ মীমাংসা ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে।
(২) ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের মধ্যবর্তী অল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের মানুষ সুইডেনের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ অল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করে।
৮। আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংঘ কেন গঠিত হয়েছে?
উত্তর:শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মক্ষেত্রে উন্নতি ও তাদের সুযোগ-সুবিধার সমতা বিধান করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা। এই সংস্থা ILO নামেও পরিচিত।
৯। লন্ডন ঘোষণা কী?
উত্তর:১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে লন্ডনে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিরা বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন গড়ে তোলার কথা বলেন। এটিই বিখ্যাত লন্ডন ঘোষণাপত্র' (London Declaration) নামে পরিচিত।
১০। কবে, কাদের মধ্যে আটলান্টিক চার্টার স্বাক্ষরিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ১ আগস্ট ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট আমেরিকার নিউ ফাউন্ডল্যান্ড দ্বীপের কাছে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত 'প্রিন্স অফ ওয়েলস্' ও 'অগাস্টা' নামক দুটি যুদ্ধজাহাজে এসে পরস্পর একটি গোপন শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। এটি আটলান্টিক সনদ' ('Atlantic Charter) নামে পরিচিত।
১১। কবে কোন্ সম্মেলনে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত আমেরিকার সানফ্রান্সিসকো সম্মেলন সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠিত হয়েছিল।
১২। মস্কো ঘোষণার তাৎপর্য লেখো।
উত্তর: ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩০ অক্টোবর সোভিয়েত রাশিয়া, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ডের বিদেশ মন্ত্রীরা যথাক্রমে মলেটিড, অ্যান্টনি ইডেন ও কার্ডেল হল একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সংস্থা গঠনের কথা বলেন। এটি মস্কো ঘোষণা' ('Moscow Declaration) নামে পরিচিত। এই ঘোষণার ৪ ও ৭ নং ধারায় 'সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ' নামক শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয়েছিল।
১৩। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের নাম বলো।
উত্তর:নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র হল ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চিন।
১৪। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদের দুটি উল্লেখযোগ্য ধারার নামসহ বক্তব্য বিষয় লেখো।
উত্তর: ২৬নং ধারায় নিরাপত্তা পরিষদকে 'অস্ত্র-নিয়ন্ত্রণ'-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক শক্তিকে আন্তর্জাতিক কর্তৃত্বাধীনে রাখার জন্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটোমিক ডেভেলপমেন্ট অথরিটি গঠনের কথা বললে সোভিয়েত রাশিয়া উলটো সুরে কথা বলে পারমাণবিক অস্ত্র সে ও উৎপাদন নিষিদ্ধ করতে 'মোনেইকো' গঠনের প্রস্তাব দেয়।
১৫। জাতিপুঞ্জের দুটি উদ্দেশ্য কী কী?
উত্তর:(১) বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধের বীজ পৃথিবী থেকে বিনষ্ট করা। (২) অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নতির দ্বারা বিশ্ব মানবের মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা। (৩) বিভিন্ন দেশের সৃজনশীল ও গঠনমূলক নানা প্রচেষ্টার মধ্যে সমন্বয় সাধন করাই জাতিপুঞ্জের উদ্দেশ্য। মোটকথা, যুদ্ধমুক্ত সুখী পৃথিবীর স্বপ্ন বাস্তবায়িত করাই সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রধানতম লক্ষ্য।
১৬। জাতিপুঞ্জের দুটি উল্লেখযোগ্য নীতি কী কী?
উত্তর:নীতি : সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের সনদ আইনের ২নং ধারাতে সাতটি প্রধান নাতি রয়েছে—(১) সব সদস্য রাষ্ট্র সনদ আইন অনুযায়ী নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে। (২) সব রাষ্ট্রের সমান সার্বভৌম মর্যাদা দেওয়া হবে। (৩) আন্তর্জাতিক সমস্যাবলির শান্তিপূর্ণ মীমাংসা করা। (৪) জাতিপুঞ্জের সিদ্ধান্তকে সব সদস্য রাষ্ট্রই মানা করবে।
১৭। U.N.O.-এর অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের কয়টি সংস্থা আছে? এর মধ্যে দুটির নাম বলো।
উত্তর:U.N.O.-এর অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের ১৩টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল - শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (United Nations Educational Scientific & Cultural Organisation বা UNESCO) ,খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (Food and Agricultural Organisation বা FAO), আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (International Monetary Fund বা IMF), আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থা (International Labour Organisation [ ILO), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation বা WHO), ইউরোপীয় অর্থ কমিশন (European Commission of Economy বা ECE), এশিয়া ও দূরপ্রাচ্যের অর্থ কমিশন (Economic Committee of Asia and Far-East ECARE) লাতিন আমেরিকার অর্থ কমিশন (Economic Committee of Latin America বা ECLA)
১৮। জাতিপুঞ্জের সচিবালয় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।
উত্তর: সচিবালয় হল জাতিপুঞ্জের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর সদর দপ্তরটি নিউ ইয়র্কে অবস্থিত। একজন মহাসচিব, আটজন সহকারী মহাসচিব এবং ১০,০০০-এর বেশি কর্মচারী নিয়ে সচিবালয় গড়ে উঠেছে। সাধারণত নিরাপত্তা পরিষদ পাঁচ বছরের জন্য প্রধান মহাসচিবকে নির্বাচন করে। তিনিই জাতিপুঞ্জের প্রধান প্রশাসক। তাঁর প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হল সমস্ত দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা, চিঠিপত্র আদানপ্রদান ও রেকর্ডপত্র সংরক্ষণ করা ইত্যাদি।
১৯। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের দুটি সাফল্যজনক কার্যাবলি লেখো।
উত্তর:সাফল্য : (১) হল্যান্ডের উপনিবেশ ইন্দোনেশিয়াতে ইন্দোনেশীয় রিপাবলিক দলের যুদ্ধ শুরু হয়| জাতিপুঞ্জের হস্তক্ষেপে (জুলাই, ১৯৪৭) ডাচ্রা সরে যায়। (২) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেনা অপসারণ না করে কোনো কোনো দেশ ইরানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে খবরদারি শুরু করে।জাতিপুঞ্জের হস্তক্ষেপে তারা সৈন্য সরায়।
২০। জাতিপুঞ্জের পরিচয় দাও।
উত্তর: যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই'—এই ছিল জাতিপুঞ্জের মূলমন্ত্র। সর্বগ্রাসী বিধ্বংসী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (১৯৩৯-১৯৪৫) নির্মম ধ্বংসযজ্ঞের বিভীষিকা বিশ্বমানবের অন্তরে যে হতাশা, আতঙ্ক ও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল, তার ফলেই তামাম বিশ্বের মানুষ শাস্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। এরই ফলশ্রুতি হল 'সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ' (১৯৪৫)।
২১। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের ভবিষ্যৎ কী?
উত্তর:জাতিপুঞ্জের ভবিষ্যৎ ও তার সংস্কার জাতিপুঞ্জ সম্পর্কে অনেক চাপান-উতোর শোনা গেলেও বড়ো আশার কথা হল- (১) দ্বিতীয় বিশ্বের পর এই বিশ্বকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিষমুক্ত করতে পেরেছে। (২) বিবদমান শক্তিগুলিকে আলোচনার টেবিলে টেনে এনে শাস্তি আলোচনার দ্বারা বিভিন্ন দেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমিত করেছে। (৩) জাতিপুঞ্চ প্রচুর অর্থব্যায়ে পৃথিবীর বহু দেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন রেখে সংঘাত ও রক্তক্ষণী যুদ্ধের হাত থেকে ওই সব দেশকে রক্ষা করেছে।
২২। জাতিসংঘ ও জাতিপুঞ্জের একটি সাদৃশ্য ও ও একটি বৈসাদৃশ্য লেখ।
উত্তর: সাদৃশ্য : (১) জাতিসংঘ ও জাতিপুঞ্জ দুটি সংস্থাই আন্তর্জাতিক শান্তি সংস্থা রূপে পরিচিতি। (২) দুটি সং মার্কিন রাষ্ট্রপতিদের দ্বারা গঠিত। (৩) দুটি সংস্থাই দুটি বিশ্বযুদ্ধের পরই গঠিত হয়।
বৈসাদৃশ্য : (১) জাতিসংঘ গঠিত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ গঠিত হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। (২) জাতিসংঘের মূল রূপকার হলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি উড্রো উইলসন। জাতিপুঞ্চ গঠনের পিছনে মার্কিন রাষ্ট্রপতি
আরো পড়তে পারেন: 1.প্রথম অধ্যায় ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক অনুশীলনী
2. দ্বিতীয় অধ্যায় বিপ্লবী আদর্শ নেপোলিয়নীয় সাম্রাজ্য ও জাতীয়তাবাদ
3.তৃতীয় অধ্যায় উনবিংশ শতকের ইউরোপ রাজতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত